তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে কি বুঝ? আই সি টি কি ? ICT কাকে বলে?

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) বলতে এমন প্রযুক্তির সমষ্টি বোঝায় যা তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ, বিনিময় এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে কম্পিউটার, টেলিকমিউনিকেশন, সফটওয়্যার এবং নেটওয়ার্কিং সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত, যা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সমাজকে তথ্য ও যোগাযোগ সেবা প্রদান করতে সাহায্য করে। ICT আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, এবং বিনোদনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

আইসিটি কি ? ICT কাকে বলে?

ICT বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (Information and Communication Technology) হলো এমন প্রযুক্তির সমষ্টি, যা তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ, আদান-প্রদান এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, টেলিফোন, মোবাইল নেটওয়ার্ক, স্যাটেলাইট সিস্টেম, এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত, যা যোগাযোগ ও তথ্য ব্যবস্থাপনাকে সহজ ও কার্যকর করে। ICT শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা আধুনিক সমাজের অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে।

তথ্য প্রযুক্তির জনক

তথ্য প্রযুক্তির জনক হিসেবে ব্রিটিশ গণিতবিদ এবং বিজ্ঞানী চার্লস ব্যাবেজ (Charles Babbage) কে গণ্য করা হয়। তিনি ১৯ শতকে প্রথম প্রোগ্রামযোগ্য কম্পিউটারের ধারণা দেন এবং একটি যান্ত্রিক কম্পিউটার “অ্যানালাইটিক্যাল ইঞ্জিন” তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এই যন্ত্রটি আধুনিক কম্পিউটারের ভিত্তি স্থাপন করে এবং তাই চার্লস ব্যাবেজকে “কম্পিউটারের জনক” হিসেবেও অভিহিত করা হয়, যা তথ্য প্রযুক্তির বিকাশে প্রথম বড় পদক্ষেপ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপাদান সমূহ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT)-এর প্রধান উপাদানগুলো হলো:

১. হার্ডওয়্যার (Hardware):

এটি হলো সমস্ত শারীরিক যন্ত্রাংশ যা তথ্য প্রযুক্তির কার্যক্রম পরিচালনা করে। উদাহরণ:

  • কম্পিউটার
  • স্মার্টফোন
  • প্রিন্টার
  • নেটওয়ার্ক রাউটার
  • সার্ভার

২. সফটওয়্যার (Software):

হার্ডওয়্যারের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম এবং অ্যাপ্লিকেশন। উদাহরণ:

  • অপারেটিং সিস্টেম (Windows, Linux)
  • অফিস অ্যাপ্লিকেশন (Microsoft Office, Google Docs)
  • ব্রাউজার (Chrome, Firefox)
  • গ্রাফিক্স সফটওয়্যার (Adobe Photoshop)

৩. নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট (Network & Internet):

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ডেটা ট্রান্সফার এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্ক সিস্টেম। উদাহরণ:

  • ল্যান (LAN)
  • ওয়াই-ফাই (Wi-Fi)
  • ইন্টারনেট

৪. ডেটাবেজ (Database):

ডেটা সংরক্ষণ, পরিচালনা এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত সিস্টেম। উদাহরণ:

  • মাইএসকিউএল (MySQL)
  • ওরাকল (Oracle)

৫. তথ্য নিরাপত্তা (Information Security):

তথ্য ও যোগাযোগের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ও পদ্ধতি। উদাহরণ:

  • ফায়ারওয়াল (Firewall)
  • এনক্রিপশন (Encryption)

৬. যোগাযোগ প্রযুক্তি (Communication Technology):

যেকোনো যোগাযোগ মাধ্যম যা ব্যবহারকারীদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান সম্ভব করে। উদাহরণ:

  • মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক
  • ভিডিও কনফারেন্সিং
  • ইমেইল সিস্টেম

এই উপাদানগুলো একত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কাঠামো তৈরি করে, যা আধুনিক সমাজের দৈনন্দিন কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্রমবিকাশ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT)-এর ক্রমবিকাশ মানুষের ইতিহাসের সাথে যুক্ত এবং এটি বিভিন্ন পর্যায়ে অগ্রসর হয়েছে। প্রাচীন কাল থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত ICT-এর বিকাশকে কয়েকটি প্রধান ধাপে ভাগ করা যায়:

১. প্রাচীন ও মধ্যযুগে তথ্য আদান-প্রদান:

তথ্য ও যোগাযোগের প্রযুক্তির প্রাথমিক ধাপগুলোর মধ্যে ছিল মৌখিক যোগাযোগ, চিত্র, এবং লিপি বা লেখার আবিষ্কার।

  • মৌখিক যোগাযোগ: মানুষ মুখে মুখে তথ্য আদান-প্রদান করত।
  • লিপি ও লেখার আবিষ্কার (৩২০০ খ্রিস্টপূর্ব): মেসোপটেমিয়া ও মিশরে প্রথম লেখা ব্যবস্থার উদ্ভব হয়, যা তথ্য সংরক্ষণ ও প্রজন্মান্তরে আদান-প্রদানের পথ তৈরি করে।
  • পোস্টাল সিস্টেম: চিঠির মাধ্যমে দূরে তথ্য প্রেরণ শুরু হয়।

২. প্রথম মুদ্রণ যন্ত্রের আবিষ্কার (১৪৪০):

ইউরোপে যোহানেস গুটেনবার্গ মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কার করেন, যা বই ও তথ্যের দ্রুত প্রচার ও সংরক্ষণে বিপ্লব ঘটায়। এই আবিষ্কার শিক্ষার প্রসার এবং জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৩. টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন যুগ (১৮৩০-১৯৩০):

এ সময়ে বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উদ্ভব ঘটে, যা দূরত্ব অতিক্রম করে দ্রুত তথ্য আদান-প্রদানকে সম্ভব করে তোলে।

  • টেলিগ্রাফ (১৮৩৭): স্যামুয়েল মর্সের টেলিগ্রাফ ব্যবস্থার মাধ্যমে দীর্ঘ দূরত্বে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠানো সম্ভব হয়।
  • টেলিফোন (১৮৭৬): আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেন, যা সরাসরি কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে যোগাযোগের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।

৪. রেডিও ও টেলিভিশন যুগ (১৯২০-১৯৫০):

এই সময়ে সম্প্রচার মাধ্যম হিসেবে রেডিও এবং টেলিভিশনের আবিষ্কার ও ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়।

  • রেডিও: ১৯২০-এর দশকে রেডিওর মাধ্যমে তথ্য, সংবাদ, ও বিনোদন সম্প্রচার শুরু হয়।
  • টেলিভিশন: ১৯৪০-এর দশকে টেলিভিশনের আবির্ভাব ঘটে, যা চিত্র ও শব্দকে একত্রিত করে দূরদর্শনের মাধ্যমে সরাসরি তথ্য প্রদান সম্ভব করে।

৫. কম্পিউটার ও ইন্টারনেট যুগ (১৯৫০-বর্তমান):

এটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপ্লব বলে বিবেচিত।

  • কম্পিউটারের আবিষ্কার: ১৯৪০ ও ৫০-এর দশকে চার্লস ব্যাবেজের ধারণার উপর ভিত্তি করে আধুনিক কম্পিউটার বিকশিত হয়, যা তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জগতে অসীম সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে।
  • ইন্টারনেটের উদ্ভব (১৯৬০-১৯৯০): ARPANET থেকে শুরু করে ১৯৮০ ও ৯০-এর দশকে ইন্টারনেটের বিস্তৃতি ঘটে। এটি তথ্যের আদান-প্রদান এবং বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লব সৃষ্টি করে।

৬. মোবাইল প্রযুক্তি ও স্মার্টফোনের বিকাশ (১৯৯০-বর্তমান):

১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেটের সংমিশ্রণে তৈরি হয় স্মার্টফোন প্রযুক্তি, যা মানুষের হাতে হাতে তথ্যপ্রযুক্তি এনে দেয়।

  • মোবাইল ফোন: ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে মোবাইল ফোন যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে আবির্ভূত হয়।
  • স্মার্টফোন (২০০৭): অ্যাপল কোম্পানির আইফোন স্মার্টফোন প্রযুক্তির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যা মোবাইল ইন্টারনেট, অ্যাপ্লিকেশন, এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে সহজতর করে।

৭. বিগ ডাটা, ক্লাউড কম্পিউটিং, ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) যুগ (২০১০-বর্তমান):

বর্তমান যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে, যেখানে বিশাল পরিমাণ তথ্যের ব্যবস্থাপনা, বিশ্লেষণ এবং ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।

  • বিগ ডাটা: বিশ্বজুড়ে বিশাল পরিমাণ উপাত্ত সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণের প্রযুক্তি।
  • ক্লাউড কম্পিউটিং: অনলাইন ভিত্তিক ডাটা স্টোরেজ ও প্রসেসিং সুবিধা, যা ডেটার অ্যাক্সেস এবং শেয়ারিং সহজতর করেছে।
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI): মেশিনের মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণ, শেখার ক্ষমতা, এবং স্বয়ংক্রিয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য AI প্রযুক্তির ব্যবহার।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তার ক্রমবিকাশের প্রতিটি পর্যায়ে মানুষের জীবনকে আরও সহজ, কার্যকর এবং সংযুক্ত করেছে। অতীতের মৌখিক ও লিখিত যোগাযোগ থেকে শুরু করে বর্তমানের ডিজিটাল প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে ICT-এর ক্রমবিকাশের ইতিহাস হলো আমাদের সভ্যতার অগ্রগতির প্রতিফলন।

বর্তমান বিশ্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদানসমূহ

বর্তমান বিশ্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং মানুষের জীবনযাত্রাকে অধিক কার্যকর ও সহজ করেছে। এর অবদানগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:

১. শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদান:

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখছে।

  • ই-লার্নিং ও অনলাইন কোর্স: শিক্ষার্থীরা যেকোনো স্থান থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্লাস করতে পারছে। Coursera, Udemy এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সংযুক্ত করেছে।
  • ভার্চুয়াল ক্লাসরুম: শিক্ষার্থীরা ভিডিও কনফারেন্সিং টুল যেমন Zoom, Microsoft Teams ইত্যাদির মাধ্যমে ক্লাস করতে পারছে।

২. স্বাস্থ্য সেবায় অবদান:

ICT-এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে।

  • টেলিমেডিসিন: রোগীরা দূরবর্তী অবস্থান থেকে ডাক্তারদের সাথে ভিডিও কলের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে পারছে।
  • স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ডেটাবেস: রোগীর চিকিৎসার তথ্য ডিজিটালি সংরক্ষণ করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ চিকিৎসার জন্য সহায়ক।

৩. ব্যবসায়িক উন্নয়ন:

ব্যবসা খাতে ICT অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।

  • ই-কমার্স: অনলাইন কেনাকাটা Amazon, Alibaba, এবং অন্যান্য ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়েছে।
  • ডিজিটাল মার্কেটিং: সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল, এবং সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য ও সেবা প্রচার করছে।

৪. যোগাযোগে উন্নতি:

ICT-এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে দ্রুত এবং সহজ যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে।

  • ই-মেইল ও ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং: দ্রুত বার্তা আদান-প্রদানের জন্য Gmail, WhatsApp, Telegram ইত্যাদির ব্যবহার ব্যাপক জনপ্রিয়।
  • সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম: Facebook, Twitter, Instagram-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো মানুষকে বিশ্বব্যাপী সংযুক্ত রেখেছে।

৫. সরকারি সেবা ও ই-গভর্নেন্স:

সরকারি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ICT কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।

  • ই-গভর্নেন্স: জনগণ অনলাইনের মাধ্যমে ট্যাক্স, জন্ম সনদ, ভোটার আইডি ইত্যাদি সরকারি সেবা পেতে পারে। বাংলাদেশে A2I (Access to Information) প্রোগ্রাম এর অন্যতম উদাহরণ।
  • ডিজিটাল পেমেন্ট: বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন যেমন বিল প্রদান, কর পরিশোধ, ইত্যাদি অনলাইনে সহজে করা সম্ভব হচ্ছে।

৬. বিনোদন ও মিডিয়া:

ICT আধুনিক বিনোদনের ধরণ পরিবর্তন করেছে।

  • স্ট্রিমিং সার্ভিস: Netflix, YouTube, Spotify-এর মাধ্যমে মানুষ যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের বিনোদন উপভোগ করতে পারে।
  • ভিডিও গেমিং ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি: ICT-র মাধ্যমে উন্নত গেমিং এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

৭. গবেষণা ও উদ্ভাবন:

গবেষণার ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

  • বিগ ডাটা ও অ্যানালিটিক্স: বড় তথ্যভান্ডারের মাধ্যমে গবেষণা করা এবং ফলাফল বিশ্লেষণ করা সহজ হয়েছে।
  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI): মেশিন লার্নিং ও AI-এর মাধ্যমে জটিল সমস্যার সমাধান ও উদ্ভাবন করা হচ্ছে।

৮. ব্যক্তিগত জীবনে সুবিধা:

ICT ব্যক্তিগত জীবনকে সহজ এবং আরামদায়ক করে তুলেছে।

  • অনলাইন ব্যাংকিং: ব্যাংকিং সেবাগুলো এখন মানুষ ঘরে বসেই করতে পারছে।
  • স্মার্ট হোম ডিভাইস: Alexa, Google Home-এর মতো ডিভাইসগুলো ঘরের বিভিন্ন কাজ অটোমেশন করতে সাহায্য করছে।

৯. অর্থনৈতিক উন্নয়ন:

ICT বিশ্ব অর্থনীতির প্রসার ও উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

  • ডিজিটাল অর্থনীতি: ফ্রিল্যান্সিং, ই-কমার্স এবং অন্যান্য ডিজিটাল ব্যবসায়ের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটছে।
  • আউটসোর্সিং ও রিমোট ওয়ার্ক: বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রিমোট কাজ করছে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) বর্তমান বিশ্বে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। এটি আমাদের জীবনকে আরও সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর করে তুলেছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (ICT) সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা:

  1. দ্রুত যোগাযোগ: ইমেইল, মেসেজিং, ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ।
  2. ই-লার্নিং: অনলাইন শিক্ষা ও কোর্সের মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকে শিক্ষা গ্রহণ।
  3. ই-কমার্স: অনলাইন কেনাকাটা ও ব্যবসার সহজতর উপায়।
  4. স্বাস্থ্যসেবা: টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে দূরবর্তী চিকিৎসা।
  5. গবেষণা: বিগ ডাটা ও AI-এর মাধ্যমে উন্নত গবেষণা।
  6. কর্মসংস্থান: ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি।
  7. ডিজিটাল পেমেন্ট: মোবাইল ব্যাংকিং ও অনলাইন পেমেন্টের সহজতা।

অসুবিধা:

  1. নিরাপত্তা ঝুঁকি: হ্যাকিং ও সাইবার অপরাধের আশঙ্কা।
  2. ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন: অনলাইন ডেটা চুরি।
  3. বেকারত্ব: অটোমেশন ও AI-এর কারণে কর্মসংস্থানে সংকট।
  4. মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা: অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে মানসিক চাপ।
  5. অতিরিক্ত নির্ভরতা: প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে।
  6. ডিজিটাল বিভাজন: উন্নত ও অনুন্নত অঞ্চলের মধ্যে প্রযুক্তির ব্যবধান।
  7. বিনোদনে আসক্তি: গেমিং ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তির সমস্যা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) নিয়ে ১০টি MCQ

০১. কম্পিউটারের মস্তিষ্ক বলা হয় কোন অংশকে?
ক) RAM
খ) CPU
গ) Hard Disk
ঘ) Monitor

উত্তর: খ) CPU

০২. WWW এর পূর্ণরূপ কী?
ক) World Wide Web
খ) Wireless Web World
গ) Wide Wireless Web
ঘ) Web World Wide

উত্তর: ক) World Wide Web

০৩. বৈদ্যুতিন ডাক ব্যবস্থাকে কী বলা হয়?
ক) ই-মেইল
খ) ই-বুক
গ) ই-কমার্স
ঘ) ই-গভর্নেন্স

উত্তর: ক) ই-মেইল

০৪. বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলের নাম কী?
ক) SEA-ME-WE 4
খ) SEA-ME-WE 5
গ) BSCCL
ঘ) BTCL

উত্তর: ক) SEA-ME-WE 4

০৫. কোনটি একটি ইনপুট ডিভাইস?
ক) Printer
খ) Monitor
গ) Keyboard
ঘ) Speaker

উত্তর: গ) Keyboard

০৬. কম্পিউটারের সবচেয়ে ছোট তথ্য একক কী?
ক) কিলোবাইট
খ) মেগাবাইট
গ) বিট
ঘ) বাইট

উত্তর: গ) বিট

০৭. কম্পিউটার ভাইরাস কী?
ক) হার্ডওয়্যার সমস্যা
খ) সফটওয়্যার সমস্যা
গ) ম্যালওয়্যার যা কম্পিউটারকে ক্ষতি করতে পারে
ঘ) ইন্টারনেট সংযোগ সমস্যা

উত্তর: গ) ম্যালওয়্যার যা কম্পিউটারকে ক্ষতি করতে পারে

০৮. কোনটি প্রোগ্রামিং ভাষা?
ক) Windows
খ) Python
গ) MS Word
ঘ) Photoshop

উত্তর: খ) Python

০৯. IP অ্যাড্রেসের প্রধান কাজ কী?
ক) ডেটা সংরক্ষণ
খ) ইন্টারনেট ব্রাউজিং
গ) নেটওয়ার্কে ডিভাইস শনাক্তকরণ
ঘ) সফটওয়্যার ইনস্টল

উত্তর: গ) নেটওয়ার্কে ডিভাইস শনাক্তকরণ

১০. বাংলাদেশে প্রথম মোবাইল ফোন সার্ভিস চালু হয় কবে?
ক) ১৯৯৩
খ) ১৯৯৭
গ) ২০০১
ঘ) ২০০৫

উত্তর: ক) ১৯৯৩

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top